Netscape: বিশ্বের প্রথম ব্রাউজার

১৯৯৪ সাল। ইন্টারনেট ধীরে ধীরে সবদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। সবাই বুঝার চেষ্টা করছে এই জিনিস দিয়ে কি করে ! তখনকার ইন্টারনেটে বলতে শুধু কয়েকশো বোরিং ওয়েবসাইট আর সেগুলোতে প্লেইন টেক্সট ছিল।
কিন্তু একটা কোম্পানি ঠিকই মানুষদেরকে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করাচ্ছে। কোম্পানির নাম নেটস্কেপ । ইন্টারনেট মডেম থাকলে যে কেউ নেটস্কেরপের ফ্রি ব্রাউজার দিয়ে ওয়েবসাইট সার্ফ করতে করতে। তখনকার ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর ৯০ শতাংশ নেটস্কেপ ইউজার ছিল। এত বড় মার্কেট ধরার জন্য বিল গেটস ঘোষনা দেয় নতুন ওয়েব ব্রাউজার বানানোর। মাল্টিবিলিয়নার এই কোম্পানির সাথে যুদ্ধ করতে হলে তাদের দরকারন অনেক টাকা। বাৎসরিক ৪০ মিলিয়ন রেভিনিউ থাকলেও এখন ও লাভের মুখ দেখেনি। ফান্ডিং এর জন্য মাত্র ১৬ মাস বয়সী এই কোম্পানি পাব্লিক ট্রেডেড কোম্পানি হয়ে যায়। নেটস্কেপ এর ভ্যালুয়েশন দাঁড়ায় ২ বিলিয়ন ডলারে।
মাইক্রোসফট পিসি মার্কেট ডমিনেট করলেও ইন্টানেট ইরার(era) সাথে যুক্ত হতে দেরী করে ফেলে। কিন্তু যখনি সুযোগ দেখে, বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে দূর্বল একটি ব্রাইউজার তৈরি করে এবং অপারেটিং সিস্টেমের সাথে বিল্ড ইন ভাবে সেট করে দেয়। কেউ না চাইলেও তার পিসিতে মাইক্রোসফটের ব্রাউজার থাকবে।

দুই দলের এই যুদ্ধের আগের গল্প অন্যরকম ছিল।

১৯৯২ সালের সময়কাল। মার্ক এন্ড্রিসেন তখন ২১ বছর বয়সী, ইলিনয় ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সাইন্সের স্টুডেন্ট । এন্ড্রিসেন ১০ বছর বয়স থেকেই কম্পিউটার নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করে। আর ১১ বছর বয়সে প্রথম প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর তৈরি করে।
একদন তার মাথায় আইডিয়া আসে যে, যদি মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছবি, ম্যাসেজ আদান প্রধান করতে পারে !
এই আইডিয়া বাস্তবায়নের জন্য দরকার একটা ভালো মানের ব্রাউজার। তখনকার ব্রাউজারগুলো ছিল ম্যাসেজ বেইস, স্লো, কমপ্লেক্স। মার্ক এন্ড্রিসেন এবং তার বন্ধু এরিক বাইনা মিলে ইউজার ফ্রেন্ডলি, রঙ্গিন ছবি সহ ওয়েবসাইট তৈরি সিস্টেম, ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেইজের সামনে পিছে যাওয়া (breadcrumbs) সহ অসংখ্য ফিচার দিয়ে একটি ব্রাউজার তৈরি করে। নাম দেয় মোজাইক।

১৯৯৩ সালের জানুয়ারীতে এড্রিসেন তাদের ব্রাউজার উন্মুক্ত করে। তাদের ধারনা ছিল টেক গিক আর , রিসার্চাররাই এসব ইউজ করবে। কিন্তু তাদের কোন ধারনাই ছিলনা যে, এই প্রজেক্ট পুরো বিশ্বই বদলে দিবে।
রাতারাতি তারা ইন্টারনেট সেলিব্রেটি বনে যায়।

১৯৯৪ সালে তারা উইন্ডোজ ইউজারদের জন্য মোজাইক ব্রাইউজার রিলিজ করে। শুধুমাত্র Word of mouth দিয়ে প্রচারনা করলেও, তাদের অসংখ্য ইউজারদের ট্রাফিক সইতে না পেরে স্কুলের সার্ভার ক্রাশ করে।
ম্যাক কপিউটারের জন্য তৈরি ভার্সনও অসাধারণ সাফল্য পায়।
এন্ড্রিসনের যখন গ্র্যাজুয়েশন শেষ হয়, তখন মোজাইকের ব্যাবহারকারী মিলিয়ন ছাড়ায়। এড্রিসন এতদিনে টেকটাইটান হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছে, এই মোজাইকের মালিক তারা না ; ইউভার্সিটি। তাদের পুরো কৃতিত্ব, টাকা সবই ইউভার্সিটি নিয়ে দেয়। রাগে , ক্ষোভে এড্রিসেন ডিগ্রী ছাড়াই শহর ছেড়ে চলে যায়।
তার একটাই প্ল্যান। কিভাবে তার এই আবিষ্কারকে ধ্বংস করে দেয়া যায়।

১৯৯৪ সালের জানুয়ারী।
James Clark, Silicon Graphic কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতাকে ইনভেস্টররা কোম্পানি থেকে বের করে দেয়। এক যুগ ধরে গড়ে তোলা নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেকে বের করে দেয়ার ক্ষোভে ক্লার্ক রিভেঞ্জ নিবে ঠিক করে। তার প্রয়োজন এখন একজন দক্ষ প্রোগ্রামার। খোঁজ পায় মার্ক এন্ড্রিসনের। একসাথে স্টার্টাপ শুরু করার অফার মেইল করে।
SGI মূলত থ্রিডি গ্রাফিক্স ডিজাইন কোম্পানি। তাদের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সার্ভিস দিয়ে কার, বিল্ডিং ডিজাইন সহ হলিউডের মুভির থ্রিডি ভিডিও করা হয়।
জেমস ক্লার্ক ছিল স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। SGI প্রতিষ্ঠা করার জন্য কয়েক দফায় কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে ইনভেস্ট কালেক্ট করেন। যখন কোম্পানির গ্রোথ শুরু হয়ে , ইনভেস্টররা কন্ট্রোল নিতে শুরু করে। একসময় ১৫ মিলিয়নের এক্সিট প্যাকেজ দিয়ে কোম্পানি থেকেই বিদায় করে দেয়। ঐ সময়কার কোম্পানির ভ্যালুর সাথে তুলনা করলে এই এক্সিট প্যাকেজ সামান্য ফ্র্যাকশন মাত্র।

এদিকে মার্ক এন্ড্রিসন ইউনিভার্সিটি থেকে প্রতারিত হয়ে সিলিকন ভ্যালিতে চলে আসে। বড় কোন কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে।

মার্ক ও জিম মিলে কয়েক সপ্তাহ বেইনস্ট্রর্মিং এর পর ওয়েব ব্রাউজার তৈরির স্বিদ্ধান্ত নেয়। যেটা হবে মোজাইক থেকে বহুগুন বেটার। মার্ক এন্ড্রিসন তার আগের মোজাইক টিমের মেম্বারদের সদ্য শুরু করা প্রজেক্টে কাজ করার অফার দেয়। তার বুঝতে পেরেছিল যে প্রজেক্ট হচ্ছে , তা ইন্টারনেট রেভ্যুলশনারি। দিন রাত ভুলে তার বেটার, ফাস্টার, সিকিউরড ব্রাউজার তৈরিতে কোডিং করে। ফাইনালি স্টুডেন্টদের জন্য ফ্রি ও বাকিদের জন্য ৩৯ ডলার প্রাইস সেট করে নেটস্কেপ ব্রাউজার রিলিজ করে।
১৯৯৪ সালের অক্টোবরে যখন তারা ব্রাইউজার পাবলিকলি রিলিজ করে, কয়েকঘন্টার মধ্যে ১০,০০০ এর উপর ডাউনলোড হয়ে যায়, তাও কোন পাবলিসিটি ছাড়া।

তাদের সুখ বেশিক্ষন টিকেনি, কারণ মোজাইক টিম এন্ড্রিসনের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে। তারা ক্লেইম করে, এন্ড্রিসন মোজাইকের কোড চুরি করে নিজে কোম্পানি দাঁড় করাচ্ছে। শুধু মোজাইক না। নেটস্কেপ কে দমানোর জন্য আরো এক বড় কোম্পানি পরিকলপনা করছে, যাদের হাতে আছে পুরো কম্পিউটারের ক্ষমতা, আর আনলিমিটেড রিসোর্স।

১৯৭৪ সাল। প্রথম পার্সোনাল কম্পিউটার the Altair 8800 তৈরির খবর সব পত্রিকাজুড়ে। পল এলেন, কলেজ ড্রপআউট প্রোগ্রামিং এক্সপার্ট, এই রেভুলেশনে কিভাবে যুক্ত হওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনায় বসে, আরেক হার্ভার্ড স্টুডেন্ট বিল গেটসের সাথে। the Altair 8800 এখন শুধু নামে কম্পিউন্টার। এখনো কোন অপারেটিং সিস্টেম নাই, যে সহজে সব কাজ করে ফেলা যাবে। দুজনে প্ল্যান করে ঐ কম্পিউটার প্রস্তুতকারক কোম্পানি MITS কে কল দিয়ে বলে, যে তাদের জন্য একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করেছে। অপরপাশ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা নিয়ে দেখা করতে বয়াল হয়। সাথে সাথে দুজনে নেমে পড়ে দিন রাত কোডিং এ। শুরু করে ফার্স্ট অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়ার তৈরিতে, যা একদিন বিশ্ব শাসন করবে। বিল গেটসের প্রোগ্রামিং এর হাতেখরি ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যব থেকে। ১৭ বছর বয়সে পল এলেনের সাথে বিজনেস শুরু করে। শহরের ট্রাফিক প্যাটার্ন নির্ণয়ের সফটওয়্যার তৈরি করে। হার্ভাডে ফিজিক্স নিয়ে ভর্তি হলেও ক্লাস স্কিপ দিয়ে পড়ে থাকে যেসব সাব্জেক্ট ভালোলাগে, ওইসব ক্লাসে। বাকিসময় পল এলেনের সাথে প্রোগ্রামিং করে কাটায়।

তাদের কাছে Altair 8800 না থাকায়, সেটার সিমুলেশনের উপর ভিত্তি করে সফটওয়্যার তৈরি করে তা MITS এর কাছে উপস্থাপন ও করে।
ফাইনালি ১০% রয়েলিটি ও অন্যান্য কন্ডিশনে MITS, পল এলেনের সাথে কন্ট্রাক্ট সাইন করে।

MITS এর জন্য সফটওয়ার তৈরির পাশাপাশি তারা নিজেরদের আলাদা কোম্পানি তৈরির কাজ শুরু করে। যার নাম দেয় Microsoft.
অপারেটিং সিস্টেমের সিডি বিক্রি ভালো চললেও, সমস্যা হয় যখন সেসব সিডি আবার পাইরেটেড হয়। এতে করে, মিটস বা মাইক্রোসফট, কেউই লাভবান হচ্ছেনা।
নিজেদের ক্যাশ ফ্লো রাখার জন্য তারা অন্যান্য পার্সোনাল কপিউটার প্রস্তুতকারকদের সাথে অপারেটিং সিস্টেম বিক্রির কন্ট্রাক্ট করে। এতে করে মিটস ও তাদের সম্পর্ক আলাদত পর্যান্ত গড়ালেও, জয় হয় মাইক্রোসফটের।
স্টিভ বলমারকে মার্কেটিং হেড করে মাইক্রোসফট সিয়াটলে অফিস তৈরি করে। ১৯৮১ সালে IBM এর সাথে করা কন্ট্রাক্ট , মাইক্রোসফটকে অন্য উচ্চতায়
নিয়ে যায়। নতুন নতুন পার্সোনাল কম্পিউটার প্রস্তুতকারক বাজারে আসে, আর তাদের মাইক্রোসফটের কন্ট্রাক্টের ফলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্যাশ আসতেই থাকে।

১৯৮৫ সালে তারা প্রথম উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম রিলিজ করে, যেটায় গ্রাফিক্যাল জিনিসপত্র দেখা যেত। আগে কম্পিটারে লিখে কমান্ড করে কাজ করতে হতো।
পরের বছর, ৩১ বছর বয়সে বিল গেটস বিলিয়নার হয়ে যায়। ১ যুগের মধ্যে মাইক্রোসফট, পার্সোনাল কম্পিউটার সফটওয়্যারে রাজত্ব করে।
৪০ বছর বয়সে, বিল গেটস বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনী হয়ে যায়।

১৯৯৫ সালে নেটস্কেপ যখন তাদের ব্রাউজার “নেভিগেটর” রিলিজ করে,
তখন মাইক্রোসফটের আয় ৬ বিলিয়ন ডলার, আর কর্মী ১৭ হাজার ।

এদিকে নেটস্কেপের র‍্যাপিড গ্রোথ দেখতে পেয়ে ইলনয় ইউনিভার্টিসি প্রফিট করার সুযোগ খুজে পায়। নেটস্কেপকে তারা মোজাইকের কপি করে মামলা করে বসে। দুটো সফটওয়্যার আলাদা কোড দিয়ে করা প্রমান করার পরেও নেটস্কেপকে ৩ মিলিয়ন জরিমানা গুনতে হয়।

নেটস্কেপের স্মুথ ব্রাউজিং আর গ্রোথে বিল গেটস বুঝতে পারে যে, ব্রাউজার হতে যাচ্ছে আরেক ইন্টারনেট রেভ্যলেশন। শুরু করে নিজেদের ব্রাউজার তৈরির কাজ ।

নেটস্কেপের ২য় ভার্সন রিলিজ, আগেরবারের মতো কোন মার্কেটিং ছাড়াই লক্ষাদিক ডাউনলোড হয়ে যায়। বিভিন্ন কোম্পানি, রিচার্জ সেন্টার নেটস্কেপ লাইসেন্সিং করছে। প্রায় ৭০% শেয়ার এখন নেটস্কেপের দখলে।

৯৫ এর আগষ্টে নেটস্কেপ পাবলিক ট্রেডেড কোম্পানি হয়। পুরো ওয়ালস্ট্রিট জুড়ে নেটস্কেপের চাহিদা। প্রথম দিনেই ৬০ ডলার পার শেয়ার হয়ে যায়। যায়গা করে নেয় ফোর্বস, নিউইয়র্ক জার্নাল পত্রিকাজুড়ে।

তার ঠিক ১ সপ্তা পর মাইক্রোসফট Internet Explorer রিলিজ করে। এর ফিচার, নেটস্কেপের ধারে কাছেও নাই।
নিজেদের ব্রাইউজারকে উন্নত করতে, মাইক্রোসফট, মার্ক এন্ড্রিসনের পুরনো ব্রাউজার মোজাইক লাইসেন্সিং করে, তার অনুসারে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার তৈরির কাজ চালায়।

১৯৯৬ সাল ।
নেটস্কেপ তুমুল গতিতে আগাচ্ছে। টাইম ম্যাগাজিনের পাতায় মার্ক এন্ড্রিসনকে কাভার করা হয়।
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৩.০ ভার্সন রিলিজ হয়েছে। এটা আগের ভার্সন থেকে অনেক ফাস্ট। ইউজার বাড়ানোর জন্য মাইক্রোসফট সব উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ডিফল্ট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সেট করে দেয়। ডাউনলোড ছাড়াই নতুন কম্পিউটার ইউজাররা ফ্রি, ডিফল্ট ব্রাইউজার পেয়ে যাচ্ছে। এবং নেটস্কেপের ইউজার হারানো শুরু।

১৯৯৭ সালে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৪.০ রিলিজ করার করা মাধ্যমে অরেক দফা নেটস্কেপের মার্কেট কেড়ে নেয়। এই যুদ্ধের শুরুর মূল ১৯৯৫ সালে, যখন গেটস নেটস্কেপের সাথে পার্টনারশীপের চেষ্টা চালায় ও ব্যার্থ হয়। কারণ তাদের অফার ছিল অনেকটা নেটস্কেপকে নিজের মাথায় গুলি চালানোর মত।
এর পরপরই মাইক্রোসফটা নিজদের ব্রাউজারের কাজ শুরু করে। প্রতিদ্ধন্ধীদের শেষ করার জন্য, AOL, T&T সহ কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে নেটস্কেপ বাদ দিয়ে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ইউজে উৎসাহিত করে।
এই যুদ্ধকে আরো বেগবান করতে, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার টিম নেটস্কেপের হেডকোয়ার্টারের সামনে বিশাল ‘e’ লোগো সেট করে আসে। তার এই অপমানের জবাব দেয় খুব সুন্দরভাবে।
e লোগোর উপর নেটস্কেপের মাস্কট বসিয়ে কার্ডবোর্ডে লিখে দেয়, নেটস্কেপ ৭২, মাইক্রোসফট ১৮। দুই কোম্পানির মার্কেট শেয়ার।

explorer logo at netscape HQ

কিন্তু, অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ব্রাউজার সেটাপ থাকার ট্রিক খুব ভালোভাবে কাজ করা শুরু করেছে। ১ বছরের মাথায় নেটস্কেপকে সরিয়ে বেশি মার্কেট শেয়ার এক্সপ্লোরারের কাছে এখন। যখনি নেটস্কেপ কোন কর্পোরেট ডিল করলে যায়, মাইক্রোসফট সেখান পৌছে, অপারেটিং সিস্টেম সহ বিভিন্ন অফার দিয়ে সে ডিল নিজেদের করে নেয়।
মার্কেট শেয়ার হারানোড় সাথে সাথে তাদের রেভিনিউও কমতে থাকে। ৯৮ এর মাঝামাঝিতে ৮০% কর্মী ছাটাই করে ফেলে।

বছরের শেষের দিকে ইন্টারনেট সার্ভিস কোম্পানি AOL ৪.২ বিলিয়ন ডলারে নেটস্কেপকে কিনে নেয়। তাদের মিলিয়ন ইউজার দিয়েও নেটস্কেপের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা যায়নি। ২-৩ বছর আগেও যে কোম্পানির বিলিয়ন ডলার ভ্যালুয়েশন ছিল, মিলিয়ন ইউজার ছিল, তারা এখন লাইফসাপোর্টে।

নেটস্কেপের গ্রোথ যেমন দ্রুত ছিল, পতন ও হটাৎ করে হয়েছে। মাইক্রোসফটের কৌশলের কাছে, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার থেকেও ভালো ব্রাউজার দিয়েও তার টিকতে পারেনি।

১৯৯৮ সাল ।
অপারেটিং সিস্টেমে মনোপলি ও ব্রাউজিং সফটওয়্যারে অপ্রতিযোগীতাপূর্ণ মনোভাবের জন্য ফেডারাল কোর্ট মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। দেড় বছর ধরে চলা এই মামলায় মাইক্রোসফটকে দোষী সাব্যস্ত করে।
কোর্ট মাইক্রোসফটকে দুইভাগ করার আদেশ দেয়। একভাগ অপারেটিং সিস্টেম দেখবে, অন্যভাগ সফটওয়্যার ।
মামলা চলাকালীন সময় সাংবাদিকদের জাজের সাথে সাক্ষাতকারের সুযোগ ছিল। কিভাবে এত বড় একটা মামলার স্বিদ্ধান্ত দেয়, তার প্রসেস দেখানোর জন্য। রায়ের পর ,মামলা চলাকালীন সময়ে জাজের বলা সব “Fancy Quote” গুলো পত্রিকায় হেটলাইন হয়।

২০০০ সালে মাইক্রোসফট আপলি করে। তাদের মামলার জাজ বায়াসড ছিল, যার ফলে রায় পুণরায় বিবেচনার জন্য।
এরমধ্যে মামলা পরিষদে বিজনেস ফ্রেন্ডলি এটর্নিরা আসায়, আস্তে আস্তে সেটেলমেন্টের দিকে আগায়।
২০০২ সালে , ফাইনাল রায় হয়। মাইক্রোসফট দুই ভাগ হবেনা। তবে, তাদের অপারেটিং সিস্টেম কোড ওপেন করে দিবে, এতে যে কেউ মাইক্রোসফটের জন্য সফটওয়্যার বানাতে পারে। মামলার ফি বাদে, মাইক্রোসফটের তেমন কোন ক্ষতিই হয়নি।

বর্তমানে মাইক্রোসফট সেরা পাঁচ টেক কোম্পানির তালিকায় আছে। অ্যাপল, গুগল, ফেইসবুক সবাই মাইক্রোসফট অপারেটিং সিস্টেমের ২/৩ মার্কেট শেয়ার দখলের চেষ্টা করছে। মাইক্রোসফটও ক্লাউড কম্পিউটিং, ব্রাউজার সহ বিভিন্ন সেক্টরে বিস্তার চালাচ্ছে।
প্রথম ওয়েব ব্রাউজার ও নেটস্কেপের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক এন্ড্রিসন এখন ইনভেস্টর। এখন হাজার হাজার ব্রাউজার আছে । যার শুরু ইলনয় ইউভার্সিটির কম্পিটার ল্যাব থেকে।

Source: Business Wars, CSS

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *