পাওয়ারপয়েন্টে প্রেজেন্টেশনের কথা উঠলেই একটি চিত্র আমাদের মাথায় আসে। কেউ একজন স্লাইড কতগুলো দেখিয়ে গত বিশ মিনিট ধরে বকবক করে যাচ্ছে। বোরিং সে প্রেজেন্টেশন শেষ হওয়ার পর মনে পড়ে কাল আমাকেও প্রেজেন্টেশন দিতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গৎবাধা নিয়ম এপ্লাই করে স্লাইড তৈরি করে ফেলি। পরের দিন আমিও গিয়ে আমার বোরিং প্রেজেন্টেশন দিই। যেন এক প্রতিশোধ – “গতকাল আমি বিরক্ত হয়েছিলাম, এবার তোমাদের পালা”।
প্রেজেন্টেশেন স্লাইড ভালো না হলে, ৯০% লোক আপনার কথা ৩০ সেকেন্ড পরেই ভুলে যাবে।
“If companies would have as little respect for business as they have for presentations, the majority would go bankrupt.”
Dr. John Medina
পাওয়ারপয়েন্টকে নিখুঁত ও আকর্ষনীয় করে তুলার জন্য বিখ্যাত সুইডিশ প্রেজেন্টশন এক্সপার্ট David JP Phillips এই ৬ টি টিপসের কথা উল্লেখ করেন।
১. প্রতি স্লাইডে একটি করে ম্যাসেজ ।
এক স্লাইডে যখন একাধিক ম্যাসেজ থাকবে, মানুষজন কেউ প্রথম ম্যাসেজে বেশি ফোকাস করবে, কেউ পরেরটায়। আবার কেউ দুইটাতেই ফোকাস করার ট্রাই করতে গিয়ে পুরো ব্যাপারটায় গুলিয়ে ফেলবে। তাই প্রতি স্লাইডে একটি ম্যাসেজ বা টপিক রাখুন।

২. বাক্য ব্যাবহার না করা।
পাওয়ারপয়েন্টে ৪-৫ লাইনের প্যারাগ্রাফ রেখে সেটা আবার যখন ব্যাখ্যা করলে, অডিয়েন্স আকর্ষন হারিয়ে ফেলে।
পাওয়ারপয়েন্টের ব্যাবহার হচ্ছে যেখানে বিভিন্ন ছবি, গ্রাফ, আর কী ওয়ার্ড(Key Word) থাকবে। সুতরাং পাওয়ারপয়েন্ট ব্যাবহার করুন, যেভাবে ব্যাবহার করা উচিৎ।

৩. সাইজ
চার ধরনের জিনিস আমাদের বেশি চোখে পরেঃ চলন্ত বস্তু, সিগন্যাল কালার ( লাল, হলুদ,সবুজ) , ছক আর বড় বস্তু। আর এগুলোকে আমরা সহজেই পাওয়ার পয়েন্টে ব্যাবহার করতে পারি।
স্লাইডের যে লেখাটি বড় বড় করে দেয়া থাকবে, সেটি সবার চোখে পড়ে পড়বে বেশি।
তাই কন্টেন্টের মূল কথাকেই হেডলাইন হিসেবে বা বড় অক্ষরে তুলে ধরুন।

৪. হাইলাইট করা (Contrast)
আপনি যখন স্লাইডে ১০টা কি ওয়ার্ড ব্যাবহার করবেন ; অডিয়েন্সের দৃষ্টিকে কিন্তু একটি কি ওয়ার্ডের উপর নিবদ্ধ রাখতে হবে । তার জন্য যে কি ওয়ার্ডের নিয়ে কথা বলবেন, সেটিকে হাইলাইট রেখে বাকি গুলোকে ব্লার করে দিবেন। এতে সহজে সবার দৃষ্টি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
৫. ব্যাকগ্রাউন্ড
বলতে গেলে সবারই পা্ওয়ার পয়েন্টের ব্যাকগ্রাউন্ড থাকে সাদা। একেবারে চকচকে , উজ্জ্বল ব্যাকগ্রাউন্ড। সহজেই সবার দৃষ্টি কাড়ে। কিন্তু প্রেজেন্টেশন দিচ্ছেন আপনি, পাওয়ারপয়েন্ট তো শুধুমাত্র আপনার টুল। ফোকাস থাকা উচিৎ আপনার দিকে।
সিম্পলি ব্যাকগ্রাউন্ডকে কালো করে দিন। এতে অডিয়েন্সের দৃষ্টি শান্ত, স্থির থাকবে। আর আপনার দিকেও মনোযোগ থাকবে।

৬. সীমিত বস্তু (Limited Object)
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি স্লাইডে ৬ টির বেশি বস্তু থাকলে তা মানুষের আকর্ষন হারায়। অবজেক্ট কম হলে মানুষ সহজেই দৃষ্টি ফেলে তা পড়ে বা বুঝে নিতে পারে। এর বেশি হলে মানুষকে আলাদা শক্তি খরচ করে তা পড়তে হয়। আর হিউম্যান ব্রেইন বরাবরই এনার্জি সেভিং মুডে থাকতে চায়।
তাই ছয়টি বা তার কম অবজেক্ট দিয়ে প্রত্যেক স্লাইড তৈরি করুন।
এর ফলে হয়তো স্লাইডের সংখ্যা বেশি হয়ে যাবে। কিন্তু তা মোটেও কোন সমস্যা না। বিষয় হচ্ছে কত সহজে অডিয়েন্সকে আমার কথা বুঝানো যায়।

নিচের এই ছবির স্লাইডে হয়তো অনেক গুরুত্বপুর্ন ট্যাকটিকস, ইনফরমেশন আছে। কিন্তু…… দেখে আধো কিছু বুঝা যাচ্ছে ?

পাওয়ারপয়েন্ট নিয়ে আরো জানতে দেখুন
Ted Talk
10 Minute School Tutorials
আর উপরের সব কিছু সারমর্ম করলে এরকম দাঁড়ায় –








