২০০৫ সালে MARC LORE ও তার পার্টনার Vinit Bharara মিলে অনলাইনে ডায়পার বিক্রি শুরু করে। ডায়পারে তেমন লাভ নাই। কিন্তু ডায়পার কিনতে এসে কাস্টমার রা অন্যান্য প্রফিটেবল বেবি প্রোডাক্ট কিনবে। এটাই ছিল বিজনেস প্ল্যান। ২০১০ সালে তার কোম্পানি অনলাইনে বেবি প্রোডাক্ট বিক্রয়ে শীর্ষ স্থান দখল করে। তার এই সফলতা অনেক বড় বড় কোম্পানির নজরে আসে। অ্যামাজনের কাছে তারা কোম্পানি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। কয়েকবছর পর মার্ক লরি jet.com নামে ইকমার্স সাইট চালু করে অ্যামাজনের সাথে কম্পিটিশনের জন্য। পরে তা ওয়ালমার্ট কিনে নেয়।
মার্ক লরের শৈশব কাটে আমেরিকার নিউ জার্সিতে। মা ছিল বডি বিল্ডার। সে সুবাধে স্কুল , কলেজে এথলেটিকে তার ভালো একটিভিটি ছিল। এমন কি, ১৯৯৬ সালে সে জাতীয় ববস্লেডিং অলিম্পিক টিমে কোয়ালিফাই করে। যদিও ব্যাংক জব ছেড়ে সেদিকে আর আগায়নি।
ছোটবেলা থেকেই ম্যাথের প্রতি আগ্রহী ছিল। Bucknell University থেকে স্লাতক শেষ করে ব্যাংকে জয়েন করে। তার আশেপাশের আত্মীয় স্বজনরা বেশ ধনী ছিল। বেশী করে ইনকামের জন্য ব্যাংকে খাটা শুরু করে। তার ফলাফল স্বরুপ, মাত্র ২৮ বছরেই রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টিমের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে যায়। আর বছরে হাফ মিলিয়ন ডলার আয় শুরু করে।
২০০০ সাল।
ব্যাংকের কালচার , পরিবেশ ভালো না লাগায় সে চাকুরি ছেড়ে তার ছোটবেলার বন্ধু মিলে The Pit. Inc শুরু করে। এটা অনেকটা স্টক মার্কেটের মত। মানুষজন বিভিন্ন বেসবল খেলোয়ারের কার্ড কিনবে। ঐ খেলোয়ার ভালো পারফর্ম করলে কার্ডের দাম বেড়ে যাবে। এরপর সে কার্ড বেশি দামে বিক্রি বা এক্সচেঞ্জ করা যায়। নিজের পুরো সেভিং ৩৯০০ ডলার ও এঞ্জেল ইনভেস্টর মিলিয়ে ৫ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট জোগাড় করে তারা। তাদের স্টার্টআপ ভালোই জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ১০ মাসের মাথায় “ডটকম ক্রাশ” ঘটায়, তাদের বিজনেস শূণ্যতে নেমে যায়।
বেসবল কার্ড কোম্পানি The tops ৫.৭ মিলিয়ন ডলারে তার কোম্পানি কিনে নেয়।
নতুন বিজনেস কি করা যায় তার জন্য মার্ক গুগলে রেন্ডম ওয়ার্ড সার্চ দিচ্ছিল। হটাৎ খেয়াল করে Diaper লিখে মাসে ২০০০ সার্চ হয়। সেসময় রিজনেবল দামে কোন ওয়েবসাইট , এমনকি অ্যামাজনও ডায়পার বিক্রি করত না। তারা এ ব্যাপারে খোজ শুরু করে। রিটেইল স্টোরের মালিকরা কম দামে ডায়পার বিক্রি করত। এখানে লাভ অতি নগণ্য। ডায়পার প্রস্তুতকারকরা তাদের কাছে ডায়পায় সাপ্লাই দিতে চায়নি। কারণ তারা জানে, রেগুলার প্রাইসে বিক্রি , সাথে ফ্রি শিপিং দিলে ডায়পার বিজনেসে লাভ থাকেনা।
২০০৫ সালে মার্ক লরি ও তার বন্ধু ভিনি মিলে 1800Diaper.com শুরু করে। দুইবছর পর Diapers.com ডোমেইনে মুভ করে।
প্রথমদিকে তারা কসকো, স্যাম’স ক্লাবের মত হোলসেল স্টোরে গিয়ে ডায়পার আনত , এরপর তা শিপিং করত। এবং প্রতি সেলে তাদের লস হত। ওয়েবসাইট লঞ্চ করার ৫-৬ মাসের মাথায় “BABYTALK MAGAZIN” এ তাদের ফিচারের পর সেল বাড়া শুরু হয়। এর আগে গুগল এড দিয়ে প্রচারণা চালাত।
ডেলিভারি বক্সের সাইজের উপর ডেলিভারি চার্জ নির্ভর করত। খরচ কমানোর জন্য তাদের ৩৫ রকম সাইজের ডেলিভারি বক্স ছিল।
ডায়পারের পাশাপাশি অন্যান্য বেবি প্রোডাক্ট সেল করতো, যেখান থেকে প্রফিট আসতো। বেশিভাগ কাস্টমারই ডায়পারের পাশাপাশি অন্যন্য জিনিস কিনত।
soap.com, wag.com সহ বেবি রিলেটেড বিভিন্ন প্রোডাক্ট টার্গেট করে ১০ টি ওয়েবসাইট লঞ্চ করে। নতুন বাবা-মা দের সাথে লং টার্ম সম্পর্ক/ কাস্টমার করাই ছিল তাদের মূল বিজনেস স্ট্র্যাটেজি।
সব ওয়েবসাইটকে একটি ব্র্যান্ডের আওতায় নিয়ে আসে। ব্র্যান্ডের নাম দেয় “Quidsi”।
দ্রুত ডেলিভারি ও ভালো কাস্টমার সার্ভিস দেয়ায় তাদের গ্রোথ দেখার মত ছিল। তাই খুব বেশি লাভ না দেখলেও ইনভেস্টরদের টাকা ঢালতে সমস্যা ছিল না । ২০১০ সালে তাদের রেভিনিউ ৩০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি ছিল। যেখানে ২০০৮ ও ২০০৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৮৯ মিলিয়ন, ১৮২ মিলিয়ন ডলার।
২০০৯ সালে অ্যামাজন তাদেরকে কিনে নেয়ার ইঙ্গিত দেয়। ডায়পার ডটকম থেকে সারা না পেয়ে কিছুদিন পর অ্যামাজন তাদের স্টোরে ডায়পার প্রাইস ৩০% কমিয়ে দেয় । ডায়পার এমনিতেই লস প্রজেক্ট , তার উপর এত ছাড় ! বুঝাই যাচ্ছে অ্যামাজন কাদের কাস্টমার দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
অন্য একটা কোম্পানিও তাদের কিনে নেয়ার প্রস্তাব জানায়। কিন্তু মার্ক লরি বুঝতে পারে, অ্যামাজন যখন টার্গেট করেছে, হয় তাদের কাছেই কোম্পানি বিক্রি করে দিতে হবে, নাহয় দেওলিয়া হয়ে যেতে হবে।
২০১০ সালে অ্যামাজন মার্ক ও ভিনিকে অফিসে ইনভাইট করে। এরপর জানায়, তারা AMAZON MOM নামক সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে, যেখানে নতুন মা দের ফ্রি শিপিং, মেম্বারশিপ, ডিস্কাউন্ট দিবে। এর মানে হচ্ছে , সব কাস্টমার নির্দ্বিধায় অ্যামাজনে মুভ করবে। তাদেরকে কোম্পানি বিক্রির জন্য ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার অফার করে।
এক প্রকারে তাদেরকে কোম্পানি বিক্রি করতে বাধ্য করেছে বলা যায়। এত টাকা দিয়ে কি হবে ! যেখানে এতদিনের শ্রম , স্বপ্ন সব অ্যামাজন জোর করে কিনে নিয়েছে।
কেনার পর তাদেরকে অ্যামাজনের সাথে কাজ করার জন্য ইনভাইটও করেনি। শুধু বলেছিল, “আগে যেভাবে কোম্পানি চালাতে, কম্পিট করতে, সেভাবে চালিয়ে যাও”। এভাবেই অ্যামাজন তাদের প্রতিদ্ধন্ধীদের শেষ করে দেয়।
দুই বছর পর মার্ক ডায়পার ডট কম থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়। এখন তার যে পরিমাণ টাকা, আরামসে রিটায়ারমেন্টে চলে যেতে পারবে।
২০১৪ সালে মার্ক লরি jet.com নামে ইকমার্স সাইট লঞ্চ করে। jet.com এর মডেল ছিল ডিস্কাউন্টে পণ্য বিক্রি করা। অনেক ক্ষেত্রে ডিস্কাউন্টের পরিমাণ অ্যামাজন থেকেও বেশি ছিল। তাদের টার্গেট ছিল প্রথম ২-৩ বছর লসে যাবে। এরপর কাস্টমার স্কেল বাড়ার সাথে সাথে তাদের প্রফিট আসা শুরু হবে।
২০১৬ সালে ওয়ালমার্ট ৩.৩ বিলিয়নে jet.com কিনে নেয়। পরে অবশ্য তাকে ওয়ালমার্টের ইকমার্স সেকশনের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার তত্ববধানে Walmart.com আমেরিকার দ্বিতীয় সেরা অনলাইন স্টোর হিসেবে অবস্থান নেয়।
২০২১ সালে মার্ক লরি ওয়ালমার্ট থেকে সরে দাঁড়ায়। বর্তমানে তিনি ইনভেস্ট, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন।
Sources: HIBT, Techcrunch, others 1, 2






[…] ফ্রিতেই দিয়ে দিবে। আর দুই বছর আগে ডায়পার ডটকম কে কিভাবে অ্যামাজন শেষ করেছিল তা […]