The Story of wayfair

Wayfair: টিভি স্ট্যান্ড বিক্রি থেকে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি

একটা সময় ছিল যখন ঢাকার মানুষদের বাসার জিনিসপ্ত্র আর টাংগাইলের একজনের বাসার জিনিসপত্রের অনেক তফাত। কিন্তু ইকমার্স আসার পর এখন যে যেখানে বসে যেকোন প্রোডাক্ট কিনতে পারছে, কোন বাউন্ডারি নেই। 

আমেরিকাতে যখন এরকম সমস্যা ছিল, Niraj Shah আর Steve Conine মিলে এই বৈষ্যম্য দূরের জন্য কাজ WAYFAIR ইকমার্স চালু করে। যা বর্তমানে ১৪ বিলিয়নের বেশি ডলারের আয় করে। 

নিরাজ আর স্টিভ এর পরিচয় হয় ১৯৯০ সালের এক ম্যাথ প্রজেক্টে । আগে থেকেই পরিচয় থাকলেও নিরাজ আর স্টিভ এর বন্ধুত্ব হয় যখন তারা একই বিশ্ববিদ্যালয় Cornell University ভর্তি হয়। 

৯৫ সালের দিকে কলেজ প্রজেক্ট হিসেবে তারা ইন্টারনেট ডিরেক্টরি সার্ভিস চালু করে এবং বিভিন্ন কোম্পানির কাছে লিস্টিং এর জন্য প্রস্তাব জানায়। তখন ইন্টারনেটের একদম শুরুর দিক। অনেক কোম্পানির তখন কোন ওয়েবসাইটই ছিলনা। উল্টো তাদেরকে ওয়েবসাইট বানিয়ে দেয়ার কাজ দেয়। আর তাতে ফোকাস করেই কোম্পানি দাঁড় করিয়ে ফেলে। 

কলেজ পাশের পর তারা কোম্পানি বস্টনে স্থান্তর করে। সে কোম্পানির নাম দেয় স্পিনারস। মাত্র ২ জনে শুরু করা এই ইন্টারনেট সার্ভিস কোম্পানি তারা ৩ বছর পর বিক্রি করে দেয়, ৪০ জন কর্মচারি সহ। কোম্পানির শেয়ার, ক্যাশ সব মিলিয়ে প্রতি জনে প্রায় হাফ মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়ে যায়। মাত্র ২৪ বছর বয়সে হাফ মিলিয়ন ডলারের মালিক ! এরপর ডটকম ক্রাশ। আর তাদের শেয়ারে মূল্য হয়ে যায় ০। 

২০০১ সালে তারা সিমপ্লিফাই মোবাইল নামে নতুন সফটওয়্যার বানায়। কিন্তু দেশব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কোম্পানিগুলোর বাজেট শর্ট হয়ে যায়, সিমপ্লিফাই সার্ভিস এর কাস্টমার কমা শুরু হয়। এরপর তারা এটা বাদ দিয়ে দেয় চাকুরির দিকে নজর দেয়। উদ্যোক্তা মন, চাকুরির দিকে কি আর যায় ! 

দুজন মিলে ইন্টারনেট ভিত্তিক কি বিজনেস করা যায় তার আলোচনা করত। সেসময় AMAZON.COM গ্রো করছিল। তাদের মাথায় ইকমার্স বিজনেস নিয়ে কাজ করার আইডিয়া আসে। সেজন্য তারা বিভিন্ন ছোটখাট কোম্পানির সাথে কথা বলে, কিভাবে তারা সেল করে, কেমন গ্রো করে ইত্যাদি। 

নরমালি কিছু কিনতে চাইলে আপনাকে লোকাল দোকানে যেতে হবে, সেখানে থাকা ২-৩ টা ভ্যারিয়েশন থেকে যে কোন একটা কিনতে হবে। কিন্তু যদি ইন্টারনেট থাকে, সার্চ করে একই প্রোডাক্টের বিভিন্ন ধরন খুঁজে পাওয়া যায়। আর ঘরে বসেই অর্ডার করে সেসব ইউনিক কালেকশন পাওয়া যায়। 

এই থিমই তাদেরকে মূলত ইকমার্সে মোটিভেট করে।  

তখন ইয়াহু সার্চ ইঞ্জিতে দেখা যেত, কোন জিনিসের জন্য কত মানুষ সার্চ করেছে । সে সার্চ লিস্ট থেকে দেখে দেখে সর্বোচ্চ সার্চ করা প্রোডাক্ট নিয়ে ওয়েবসাইট লঞ্চ করে। 

মাসখানেক রিসার্চের পর ২০০২ সালে তারা racks&stands . com ওয়েবসাইট চালু করে। এখানে তারা টিভি ও স্পিকার স্ট্যান্ড বিক্রি করত । এটা অনেকয়াট ড্রপশিপিং এর মত ছিল । লোকাল ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউটারদের সাথে তারা কন্টাক্ট করে রেখেছিল। কোন অর্ডার আসলে তারাই সেটা ডেলিভারি দিয়ে দিত। সো ,তাদের কোন স্টক করে রাখার খরচ ছিল না। ওয়েবসাইট লঞ্চের এক ঘন্টার মধ্যেই তাদের প্রথম অর্ডার আসে। 

আর সেসময় গুগল এড সার্ভিস চালু হয়। তাদের প্রচারও সে সুবাধে বাড়ে। মাত্র ৪ মাসে তাদের সেল ২৫০০০০ ডলার হয়ে যায়। আস্তে আস্তে তারা অন্যান্য ফার্নিচার ক্যাটাগরিতে ফোকাস দেয়। 

নতুন করে একটা ইকমার্স সাইট শুরু করা তাদের জন্য কঠিন কিছু ছিলনা। ১৫ ডলারে ডোমেইন হোস্টিং , কয়েকটা কম্পিউটার আর ওয়েবসাইট বানানো তো তাদের জানাই। 

কাস্টমাররা কল দিয়ে অনেকসময় বিভিন্ন জিনিস আছে কিনা জানতে চাইত। এরপর তারা সেসব জিনিস সোর্স করা শুরু করে বিক্রি করে। দেয়ালে টিভি ফিটিং করার জন্য তারা টিভি মাউন্টস বিক্রি শুরু করে। আর ওয়েবসাইটের নাম দেয় Tvmounts&more . com । এরকম নাম দেয়ার ফলে সুবিধা হচ্ছে, কেউ যখন টিভি মাউন্টস লিখে সার্চ দেয়, তাদের ওয়েবসাইট সবার উপরে দেখায়। 

তাদের বিজনেস মডেল ছিল, বিভিন্ন ফার্নিচারের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে গুগলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন করা আর অর্ডার আসলে সাপ্লায়ার থেকে তা নিয়ে ডেলিভারি করা। 

২০০২ সালে তাদের রেভিনিউ ৭ লক্ষ ডলার হয়। আর ২০০৪ সালে সেটা দাঁড়ায় ২৭ মিলিয়ন ডলারে। hot plates . com, all bar stools . com, every Father clock . com সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ২৫০ টি ওয়েবসাইট বানায় তারা। সব সার্ভিসকে একইটা প্ল্যাটফর্মে আনতে ও নিজেদের একটা ব্র্যান্ড দাঁড় করানোর তাগিদে ২০১১ সালে তারা ইনভেস্ট নিয়ে WAYFAIR.COM চালু করে। 

২০১৪ সালে তারা আমেরিকার সবথেকে বড় অনলাইন ফার্নিচার সেলার হয়। 
এরপর নিজেদের পাবলিক কোম্পানি হিসেবে ঘোষনা করে। বর্তমানে(২০২১, মে) তাদের শেয়ার প্রাইস ২৮০ ডলার এবং ভ্যালুয়েশন প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার।  

Niraj Shah, সফলতার পেছনে ভাগ্য সহায় ছিল বলে মনে করেন। যখন ইকমার্স মার্কেট জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল, তখনি তাদের বিজনেস শুরু হওয়ায় এত বড় কোম্পানি দাঁড় করাতে পেরেছে।

২০১৯ সালে তারা ফরচুন ৫০০ কোম্পানির তালিকায় স্থান করে নেয়। ঘরের শোভাবর্ধনে জন্য সেই ২০০২ সাল থেকে শুরু করা তাদের এই কাজ, নিঃসন্দেহে অসাধারণ। 

Source: HIBT
WAYFAIR COMPANY HISTORY TIMELINE

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *